মালয়েশিয়ায় ৩৯ শ্রমিকের মানবেতর জীবন যাপন
প্রকাশিত : ২১:৩৭, ১৩ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ২১:৪৬, ১৩ এপ্রিল ২০১৮
দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার বন্ধের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টায়, সরকারের মন্ত্রী ও কূটনীতিকদের তৎপরতায় শ্রমবাজারটি পুনরায় খুললেও রিক্রুটিং এজেন্সির ষঢ়যন্ত্রে মালয়েশিয়ায় সরকারিভাবে কর্মী পাঠানোর বর্তমান পদ্ধতি জিটুজি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) আবারও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
জানা গেছে, পরিবারের মুখে হাসি ফোঁটাতে মালয়েশিয়ার মেলাক্কা শহরের জালান টেক, তামান আয়ের কেরাহ হাইট এলাকার মোহামেদ রেশা বেরাকাত এসডি এন বিএইচডিতে কাজের আশায় ৩৯ জন শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে আসে বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু মালিক পক্ষের অমানবিক আচরণে তাদের সে স্বপ্ন আজ দু:স্বপ্নে পরিণত হতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, জনশক্তি রফতানিকারক আল ইসলামকে প্রত্যেক ব্যক্তি সাড়ে ৪ লাখ টাকা করে দিয়ে তারা মালয়েশিয়া এসেছে। বর্তমানে বাড়ীতে টাকা পাঠানো দূরে থাক, থাকা খাওয়ারও তাদের ব্যবস্থা নেই। কর্মহীন থেকে দিনে একবেলা করে খাবার দেওয়ায় তাদের শরীর হয়ে গেছে দূর্বল। এক রকম বন্দীর মতো তাদের জীবন কাটছে।
এমন বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেতে ৩৯ জনের মধ্যে ২৮ জন ১২ এপ্রিল রাতের আঁধারে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে। পালিয়ে আসা ব্যক্তিরা হলেন, বি-বাড়িয়ার জসিম উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম, মো: বশির মিয়া, কুমিল্লার ফারুক, নাসু মিয়া, শামীম, সজীব, তোতা মিয়া, ফয়সল সুমন, ভোলার আজাদ, শরিফ, জাকির, আব্দুস সাওার, পাবনার আইনুল, যশোরের তবিকুর, ফারুক, চাঁদপুরের মমিন মিয়া, চুয়াডাঙ্গার আব্দুর রহিম, হাবিবুর সুহেল, নাসিম, বাগের হাটের জাহাঙ্গীর, নোয়াখালীর নাসির চট্টগ্রামের হেফাজ উদ্দিন, কিশোরগঞ্জের শফিকুল ইসলাম।
জিটুজি প্লাস প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার সরকার-নির্ধারিত খরচ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও তাদের মালয়েশিয়াতে আসতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকার ওপরে। যা নির্ধারিত খরচের আট থেকে দশ গুণ বেশি।
ভুক্তভোগীর বলছেন, খরচের বিষয়ে তাদের মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে। তাদের আসার আগেই বলা হয়েছিল মুখ খুললে তাদেরকে আর মালয়েশিয়া পাঠানো হবে না। এমন কি যে টাকা দেওয়া হয়েছে সেটাও ফেরত পাবেনা। তাই সবাই ৪০ হাজার টাকার বেশি কাউকে বলতে চায় না।
এদিকে বি-বাড়িয়ার জসিম উদ্দিনের বাবা আরু মিয়া ঢাকাস্থ জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরো অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ১৩৬০ স্মারকে ১১/০৪/২০১৮ইং তারিখে কর্মসংস্থানের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) মুহাম্মদ আতাউর রহমান এই ৩৯ জন কর্মীর ৫ মাসের বেতন ভাতা না দেয়ার কারণ ও অসহায় কর্মীদের কাজের ব্যবস্থা সহ গৃহীত পদক্ষেপ নিতে দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলরের কাছে লিখিত নোটিশ পাঠিয়েছেন।
এসি
আরও পড়ুন